পাবনায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রেজেট-সনদ বাতিল ও ভাতা বন্ধের প্রতিবাদসহ ৭ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু এমপি।
আজ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা পৌর এলাকার নয়নামতির সোহাগী-সামাদ এতিমখানার হাফেজ ছাত্রদের পাগড়ি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পাবনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দ ৭ দফা দাবির একটি স্মারকলিপি তুলে দেন ডেপুটি স্পিকারের হাতে।
এ সময় পাবনায় মুক্তিযোদ্ধাদের চলমান সংকট নিয়ে শামসুল হক টুকু বলেন, শুধু পাবনা নয়, বেড়া-সাঁথিয়াতেও এক সংক্ষুব্ধ প্রাপ্তি নিয়ে লড়াই চলছে, একটা স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি- এই সুযোগ (সংকট) সৃষ্টি করে দেয়া ঠিক হয়নি। এখন কে করেছে, কি করেছে এ নিয়ে আমি আলোচনা করতি চাইনি।
মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি- ৫০ বছর আগে আমরা স্বাধীনতা প্রাপ্ত হয়েছি। কিন্তু জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে যারা ক্ষমতায় এসেছেন পরবর্তীতে তারা মুক্তিযোদ্ধাকে অমুক্তিযোদ্ধা এবং অমুক্তিযোদ্ধাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে পরিকল্পিতভাবে মুক্তিযোদ্ধা এবং অমুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি করেছে।
তিনি বলেছেন, সেই দ্বন্দ্বটি আমরা এখন পাবনা শহরেও দেখছি এবং উপজেলাগুলোতেও দেখছি। কিন্তু এই বিষয়ে আলোচনা আমি বেমানান হিসেবে দেখছি। আপনাদের (মুক্তিযোদ্ধা) প্রয়োজনীয় বিষয়টি আমাকে বলেছেন, আমি শুনেছি। স্মারকলিপি পেয়েছি।
ডেপুটি স্পিকার আরও বলেন, দেশের মেধাবী ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচাতে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা ঘোষণা করেছেন। এজন্য মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান চালাতে হবে। দেশের ভবিষ্যৎ মেধাকে রক্ষা করতে মাদক দমন করতেই হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, সুধী সমাজ যৌথভাবে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সর্বত্র প্রচারণাসহ যা যা করা দরকার সবকিছু করতে হবে।
এমপি টুকু বলেন, দেশের কোনো এতিম না খেয়ে থাকবে না। সবাই দেশের নাগরিক। দেশের হয়ে সবাই কাজ করছে। একজন শিশু জন্মগ্রহণ করলেই সে রাষ্ট্রের মালিক হয়ে যায় এজন্য এতিমরাও সমান অধিকার পাবে। আমাদের দেশে এক সময় মাদরাসার কথা শুনলেই মনে হতো এখানে জঙ্গি তৈরির কারখানা। এ ধারণা থেকে এখন মানুষ বেড়িয়ে আসছে। মাদরাসায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। মাদরাসার ছাত্ররা আদর্শবান মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির সেবা করছে।
নয়নামতির সোহাগী-সামাদ এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী মঞ্জু, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আজিজুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হাসেম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মঞ্জু রহমান মঞ্জু, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন বিল্লু প্রমুখ।