ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে গিয়ে কেটে বাদ দিতে হলো শিশুর ৩ আঙুল! ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে গিয়ে কেটে বাদ দিতে হলো শিশুর ৩ আঙুল! – দৈনিক পাবনা
  1. admin@dainikpabna.com : admin :
  2. rakibhasnatpabna@gmail.com : Rakib Hasnat : Rakib Hasnat
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
চাটমোহর উপজেলা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিলেন আতিকুর রহমান আতিক পাবনায় ভোট না করায় চেয়ারম্যানের বাড়িতেই চেয়ারম্যানকে হুমকি দিল আ.লীগ নেতা! ৮ বছর আগে মারা গেছেন, প্রধান আসামি করে ভূমি কর্মকর্তার মামলা! চরতারাপুরে শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামী আমিরুল গ্রেপ্তার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নে দৃষ্টিনন্দন ‘গোলঘর’ শুভ উদ্বোধন  পাবনায় দপ্তরীর হাতে প্রাথমিক শিক্ষক লাঞ্চিত পাবনা বিআরটিএ অফিসে দালালদের আখড়া, টাকা ছাড়া ফাইল জমা হয়না! শরীফার গল্প’ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হলো সেন্টমার্টিনে বেড়াতে গিয়ে বিসিএস ক্যাডার হ্যাপী নিখোঁজ সুজানগরে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহিনুজ্জামান শাহীনের উঠান বৈঠক

ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে গিয়ে কেটে বাদ দিতে হলো শিশুর ৩ আঙুল!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ২ বছর আগে
  • ৯৪ বার পঠিত

ফুলের মত ফুটফুটে শিশু তামিম মোল্লা (১)। বাবা মা শিশুটির ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে ভর্তি করেছিলেন পাবনা জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সেই ডায়রিয়ার চিকিৎসা করাতে গিয়েই কাল হলো নিষ্পাপ অতটুকু শিশুটির জন্য। তার তুলতুলে নরম হাতের ৩টি আঙুলই কেটে বাদ দিতে হয়েছে।

জানা গেছে, এ বছরের ১০-১৮ জুন পর্যন্ত শিশুটি পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

শিশু তামিমের বাবা-মায়ের অভিযোগ, সঠিকভাবে ইনজেকশন পুশ না করায় এবং চিকিৎসায় অবহেলার কারণে এমন সর্বনাশ হয়েছে।

শিশুটির বাবা পাবনা সদর উপজেলার গাছপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, তিনি এর প্রতিকার চেয়ে পাবনার সিভিল সার্জনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন বিভিন্ন মহল।

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ জানান, তার ১বছর বয়সী শিশু মো. তামিম মোল্লা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে গত ১০ জুন পাবনা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া (উদরাময়) ওয়ার্ডে ভর্তি করি। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১২ জুন সকালে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী কর্তব্যরত নার্স আমার বাচ্চাকে ইনজেকশন পুষ করেন। ইনজেকশনটি শিরায় প্রয়োগ না করে সংশ্লিষ্ট পুরুষ নার্স মাংসপেশিতে প্রয়োগ করেন। ইনজেকশন পুষ করার পর থেকেই বাচ্চার ডান হাত ফুলতে থাকে এবং বাচ্চা তীব্র ব্যথার যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকে। বাচ্চার ব্যথা ও কান্নার কারণে ডিউটিরত নার্সদেরকে বারবার দেখালে তারা বলেন, ঠিক হয়ে যাবে।

ইনজেকশন পুষ করার স্থানে (ডান হাত) ক্রমান্বয়ে লালাভ-বেগুনি বর্ণ ধারণ করে এবং তার বাচ্চা অনবরত যন্ত্রণায় কাঁদতে ও ছটফট করতে থাকে। তার স্ত্রী বার বার নার্সদের ডেকে দেখালে তারা বলেন, ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে। সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসককে দেখালে তিনি ক্ষত স্থানে বরফ দিতে বলেন এবং নাপা সিরাপ খাওয়াতে বলেন।

১৩ জুন আবারো শিশু তামিমকে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে দেখালে তিনি পেসক্রিপশনে একটি মলম লিখে দেন এবং লাগাতে বলেন। পরদিন ১৪ জুন কর্তব্যরত চিকিৎসককে দেখালে তিনি তার বাচ্চাকে শিশু ওয়ার্ডে রেফার্ড করে দেন। বাচ্চার অনবরত কান্নায় তারা বারবার কর্তব্যরত ডাক্তার-নার্সদের শরণাপন্ন হন। তারা সবাই ঠিক হয়ে যাবে বলে এড়িয়ে যান।

১৮ জুন আবারো কর্তব্যরত চিকিৎসককে দেখালে চিকিৎসক শিশুকে রক্ত দিতে বলেন। তারা শিশুকে ১ ব্যাগ রক্ত দেয়ার ব্যবস্থা করেন। ওই দিনই রাত ১২টার দিকে তারা শিশুসহ হাসপাতাল ত্যাগ করেন।কিন্তু অবস্থার আরও অবনতি হলে ২১ জুন হাসপাতালে বহির্বিভাগে টিকেট কেটে চিকিৎসককে দেখালে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক শিশুকে আবারও রক্ত দিতে বলেন। তিনিও বলেন ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ বিষয়টির গুরুত্ব দেননি বলে অভিযোগ করেন জাহিদুল ইসলাম জানান।

এদিকে ৪ জুলাই হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. ওমর ফারুক মীরের কার্যালয়ে জাহিদুল ইসলাম অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় তিনি তাকে পাননি। এ সময় তার কক্ষে থাকা কয়েকজন তাকে হাসপাতাল কর্তৃক প্রদত্ত রোগী ভর্তির ফরম এর মূল কপি রেখে ফটোকপি হাতে ধরিয়ে দেন। এরপর তিনি তার শিশুকে একজন চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে নিয়ে যান।

সেই চিকিৎসক তাকে ঢাকার শিশু হাসপাতালে (নিটর, ঢাকা) দেখানোর পরামর্শ দেন। সে মোতাবেক তারা সেখানে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা শিশুটিকে পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ৬ জুলাই শিশুটিকে ঢাকার শেরেবাংলাস্থ পঙ্গু হাসপাতালে দেখানো হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা সার্জারির মাধ্যমে শিশুটির ডান হাতের ৩টি আঙ্গুল কেটে ফেলতে বলেন।

তারা জানান, অনেক বিলম্ব হওয়ার কারণে আঙুল কাটা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

শিশুটির বাবা জানান, ঢাকার ক্লিনিকে ব্যয়বহুল হওয়ায় তিনি পাবনা চলে আসেন। এরপর গত ২৯ জুলাই পাবনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে তার শিশুর ৩টি আঙ্গুল কেটে ফেলা হয়। তার শিশুর আঙুল কেটে ফেলার পর থেকে সে স্বাভাবিক আচরণ করছে।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, তার শিশুটির অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার সন্তানটি গুরুত্বপূর্ণ ডান হাতটির তিনটি আঙুল হারালো।

তিনি জানান, তার শিশুর ক্ষেত্রে যে অবহেলা করা হয়েছে তিনি তার বিচার চান। তার শিশুর আঙুল তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু তার মত কোনো অভিভাবক বা রোগীকে যেন এমন অবস্থার মুখোমুখি হতে না হয় সেজন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের বিচার চান।

পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী জানান, তিনি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি খুব শিগগিরই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন। তদন্ত রিপোর্ট পেলে সে মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর বলেন, লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অন্য মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ঘটনার তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হবে এবং সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ দৈনিক পাবনা
Themes Customized By Shakil IT Park