রাজশাহী শিক্ষোবোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত বর্তমান এডহক কমিটিকে পাশ কাটিয়ে নিয়মিত কমিটি গঠনের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে পাবনার ঈশ্বরদীর চর কুড়ুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। নিজের পছন্দমতো কমিটি গঠনের পর বিদ্যালয়ের শূন্যপদগুলোতে নিয়োগ বাণিজ্যের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলে ঈশ্বরদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম।
লিখিত অভিযোগে রেজাউল করিম জানান, নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্যই এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এবিষয়ে এডহক কমিটিই নিয়মিত কমিটি গঠনের যাবতীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এডহক কমিটিকে না জানিয়েই নিয়মিত কমিটি গঠনের জোর চেষ্টা করছেন। প্রধান শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ আছে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। মেয়াদ শেষের দিকে তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা প্রবিধান-২০০৯ এর সকল আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে বিদ্যালয় পরিচালনা বিধির পরিপন্থি কাজে লিপ্ত রয়েছেন।
তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে মাসে পর মাস অনুপস্থিত রয়েছে। তার নিয়মিত মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন। এবিষয়ে তিনি বিদ্যালয়ের কাউকে কিছু জানানও না। বিষয়টি একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়েছে।
প্রিজাইর্ডিং অফিসার নিয়োগ স্থগিত চেয়ে সভাপতি আরও জানান, চাকরির মেয়াদ শেষকালে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের চেষ্টা করছেন। এজন্য তিনি নিয়মিত কমিটির গঠনের জন্য প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ চেয়ে শিক্ষা অফিসে চিঠি পাঠিয়েছেন, যা বিধিমালার পরিপন্থি। গভর্নিং বডি ক্ষেত্রমতে ম্যানেজিং কমিটি গঠন প্রবিধান-২০০৯ এ উল্লেখ রয়েছে, নিয়মিত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কমিটির মেয়াদ ৮০ দিন থাকতেই প্রধান শিক্ষক খসড়া ভোটার তালিকা প্রণয়ন করবেন। সেই তালিকা চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য কমিটির সভায় উপস্থিত করবেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম সরকারের জারিকৃত প্রবিধানের তোয়াক্কা না করেই গোপনীয়ভাবে প্রিজাইডিং অফিসার চেয়েছেন, যা প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব অবহেলা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি অসদাচারণ।
ইতোমধ্যেই নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী- মনোনয়নপত্র আহবান ও জমাদান ১৮ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল, মনোনয়নপত্র যাছাই ২১ এপ্রিল, মনোয়নপত্র প্রত্যাহার ২৪ এপ্রিল এবং ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৫ মে।
সভাপতি বিদ্যালয়ের জমির দলিল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র অবহেলা করে হারিয়ে ফেলার অভিযোগও তুলেছেন প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগুলো মিথ্যা। এডহক কমিটির সভাপতি আমার বিরুদ্ধে নানা কথা ছড়াচ্ছেন। বিষয়টি আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করেছি। ইউএনও আমাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, এই কমিটি গঠনে আইনগত কোনও বাধা নেই। সেই অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে।’
অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে ঈশ্বরদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আক্তার বলেন, ‘এবিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তাদের অভিযোগ ভোটার তালিকাই হয়নি। যদি ভোটার তালিকাই না হয় তাহলে নিয়োগকৃত প্রিজাইর্ডিং অফিসার বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।’