২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে পাবনা জেলা যুবলীগের প্রতিবাদ সমাবেশে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পণ্ড হয়ে গেছে প্রতিবাদ সমাবেশ।
রোববার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে পাবনা শহরের আব্দুল হামিদ রোডস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- যুবলীগের সাবেক নেতা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য ও দিলালপুরের মৃত জাকির হোসেনের ছেলে মো. রনি, যুবলীগকর্মী রাফিন, তমাল, ঘানা, মানিক। রনিকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এর আগে বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে জেলা যুবলীগ। ৫টার দিকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হোন নেতা-কর্মীরা। পরে সেখান থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি বাণীবীণা হল মোড়, চার মাথা মোড়, বড় বাজার, চাঁপা মসজিদ হয়ে আব্দুল হামিদ রোডসহ প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়ণ সেখানে শুরু হয় প্রতিবাদ সমাবেশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিবাদ সমাবেশের সামনে দাঁড়ানো নিয়ে শুরুতেই যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিকের গ্রুপের রনির সঙ্গে ওই গ্রুপের যুবলীগ নেতা বাপ্পী ও লগবাবুর মধ্যে হাতহাতির ঘটনা ঘটে। বেশ কিছুক্ষণ কিল-ঘুষি-লাথি চলতে থাকে। শেষপর্যায়ে দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। মাইকে সবাইকে সুশৃঙ্খল থাকার অনুরোধ করেন নেতারা। এরপরও পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি প্রতিবাদ সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করেন।
এরপরই নিজ বলয়ের নেতা-কর্মীদের নিয়ে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান মিন্টু, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি, যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলামসহ শীর্ষনেতারা।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মুর্তজা বিশ্বাস সনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বিষয়টি জানা নেই। বিশাল সমাবেশ ছিল। হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেছিল। এর মাঝে হয়তো কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিষয়টি আমি জানি না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ শেষ করেছি।
পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান মিন্টু ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২১ আগস্ট উপলক্ষে জেলা যুবলীগের ব্যানারে একটি প্রোগ্রাম ছিল, সেখানে যুবলীগেরই কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। তেমন কিছু নয়, নিজেদের মধ্যেই ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে।
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি তেমন নয়। শুনেছি- যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিকের গ্রুপের রনি ও বাপ্পীর মধ্যে হাতহাতির ঘটনা ঘটেছে। পরে বিষয়টি পাবনা পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল হাসান মিন্টুর মধ্যস্থতায় স্বাভাবিক হয়ে যায়। তারপরও কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।