তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাবনার চাটমোহরে বাড়ির মালিকের ভাইকে রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ উঠেছে সিরাজুল ইসলাম নামের এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। ওই যুবককে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার (৮ এপ্রিল) সকালে চাটমোহর পৌর এলাকার মহিদ কোলনীর চৌধুরী পাড়ার সবেদ প্রামাণিকের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের পর মকবুলকে থানায় নিয়ে বসিয়ে রাখেন পুলিশ সদস্য সিরাজ।
আহত যুবক মকবুল হোসেন প্রামাণিক (৩৫) উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের টলটলিপাড়া গ্রামের মৃত শফিউদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে। আর অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম চাটমোহর থানার কনস্টেবল। তিনি মকবুলের ভাই সবেদের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।
জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে সবেদ প্রামাণিকের বাড়িতে কাজ চলছিল। ভাই বিদেশে থাকায় এসব কাজের দেখাশোনা করছিলেন তার ছোট ভাই মকবুল হোসেন। শনিবার বাড়ি নির্মাণের জিনিসপত্র নেওয়ার সময় গেটের সামনে রাখা অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের মোটরসাইকেল সারাতে বলেন মকবুল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে লোহার রড দিয়ে তাকে মাথায় আঘাত করেন কনস্টেবল সিরাজ। মকবুল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে বেধরক পেটাতে থাকেন সিরাজুল ইসলাম। এ সময় আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে মকবুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করলে বাধা দেন কনস্টেবল সিরাজুল। পরে আহত মকবুলকে থানায় নিয়ে বসিয়ে রাখেন অভিযুক্ত কনস্টেবল। এরপর তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী মকবুল হোসেন জানান, আমার প্রবাসী ভাইয়ের চাটমোহর পৌর সদরের বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকেন পুলিশ কনস্টেবল সিরাজ। আমার ভাই দেশে না থাকায় বাড়িটি আমি দেখাশুনা করি। পৌর সদরের এ বাড়িটিতে আমাদের কিছু নির্মাণ সামগ্রী রাখা ছিল। শনিবার সকালে গ্রামের বাড়ির কাজে (টলটলি পাড়া) কিছু সিমেন্ট নেওয়ার জন্য আমি পৌর সদরের এ বাড়িতে আসি। সিড়ি ঘর হয়ে সিমেন্ট বের করতে হবে বিধায় আমি কিছু সময়ের জন্য সিড়ি ঘরে রাখা পুলিশ সদস্য সিরাজের মোটরসাইকলটি সড়াতে বলি। এতে বিরক্ত হয় পুলিশ সদস্য সিরাজ আমাকে বকাবকি করতে থাকে। আমি বকাবকির প্রতিবাদ করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারতে শুরু করে। মারার পর আমাকে থানায় নিয়ে যায়।
মকবুলের চাচা আব্দুল মজিদ হাজি জানান, মকবুলকে মারপিট করার পর চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে থানায় নিয়ে রেখেছে শুনে আমি থানায় যাই। বিষয়টি সহকারী পুলিশ সুপারকে (চাটমোহর সার্কেলকে) জানানোর পর আমি আমার ভাতিজাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। এখন মকবুল সেখানে চিকিৎসাধীন আছে। মকবুলের মাথা ফেটে গেছে। মাথায় চারটি সেলাই দিতে হয়েছে। হাতের আঙুলেও আঘাত পেয়েছে। একজন পুলিশ সদস্য কী করে এমন কাজ করতে পারল সেটিই ভাববার বিষয়।
অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সিরাজ বলেন, মকবুল হোসেন একবার সকাল ৭টার দিকে ডাকাডাকি করলে আমি গেট খুলে দিয়ে ঘুমাতে যাই। ৯টার কাছাকাছি সময়ে সে এসে আবার ডাকাডাকি শুরু করলে আমি গেট খুলে দেই। সে বার বার দ্রুত মোটরসাইকেল সরাতে তাড়া দিতে থাকে। তারপর ভালো না লাগলে বাসা ছেড়ে দেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সে বলে, আপনি ক্ষমতার গরম দেখাচ্ছেন। এসময় কাঠের বাটাম দিয়ে তাকে আমি মেরেছি। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
চাটমোহর থানার সহকারী পুলিশ সুপার (চাটমোহর সার্কেল) হাবিবুল ইসলাম জানান, আমি একটি প্রশিক্ষণে আছি। বিষয়টি শুনেছি তবে বিস্তারিত জানি না। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।