পাবনায় প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার হওয়ায় শাহ আলম (১৭) নামে এক স্কুলছাত্র ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। বুধবার (১৩ এপ্রিল) সকালে সদরের জালালপুরে নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ।
স্কুলছাত্র শাহ আলম সদরের জালালপুর এলাকার আসাদুল সরদারের ছেলে ও ক্যালিকো মিল এলাকার জালালপুর মাওলানা কসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জালালপুর এলাকার এক মেয়ের সঙ্গে শাহ আলমের দীর্ঘ দিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ছয় মাস আগে ওই মেয়ের অন্যত্র বিয়ে হয়ে যায়। বিয়ের চার মাসের মাথায় তার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। মঙ্গলবার রাতে শাহ আলম ওই মেয়ের বাড়িতে যায়। সে বলে, আপনার মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাতে সমস্যা নেই। আমি এখন আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাই। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের পরিবারের লোকজন তাকে বেধড়ক মারপিট করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
বাড়িতে ফিরে নামাজ পড়ে রাত সাড়ে ১১টার দিকে রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ে। সেহরির সময় মা ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া না পেয়ে দড়জা ভাঙেন। দেখেন ঘরের আড়ার সঙ্গে ছেলে ঝুলছে। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে থানা পুলিশকে খবর দেয়। সকালে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শাহ আলমের বাবা আসাদুল সরদার বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিল। ছেলেকে নিয়ে অনেক আশা করতাম। কিন্তু সেই আশা আজ মাটি হয়ে গেল। এলাকার মানুষের সঙ্গে কখনো খারাপ ব্যবহার করত না। নিরীহ ছেলের আত্মহত্যার জন্য যারা প্ররোচনা দিয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
মেয়েটির মা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছেলেটি রাতে আমাদের বাসায় আসছিল। কিন্তু আমরা তাকে মারধর করিনি। মূলত বাড়ির বাথরুমের চিপা গলি দিয়ে দৌড়ে পালাতে গিয়ে হয়ত তার শরীরে আঘাত লাগতে পারে। বাড়িতে কোনো পুরুষ মানুষ থাকে না। তাই তাকে মারধর করার প্রশ্নই আসে না।
তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছেলেটি বেকার হওয়ায় বিয়ে দিতে রাজি হইনি। তাকে অনেকবার বুঝিয়েছি একটা চাকরি করো, তারপর বিয়ে দেওয়া হবে।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্তপাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, একটি মেয়ের সঙ্গে ছেলেটির প্রেমের সর্ম্পক ছিল। তার সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় সে আত্মহত্যা করেছে। তারপরও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। মরদেহ পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারে হস্তান্তর করা হবে। পরিবার এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
-ঢাকা পোস্ট