খাবার ও আর্থিক সংকটের কারণে ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দেশের একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক হাসপাতালে রোগী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্রি বেডে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. রতন কুমার রায় স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে আগের মতো রোগী ভর্তির কার্যক্রম চলমান রাখার নির্দেশ দেওয়া হলো।
এর আগে খাবার ও আর্থিক সংকটের কারণে দেশের একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক হাসপাতাল পাবনাতে ফ্রি বেডে রোগী ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ফ্রি বেডে চিকিৎসাধীন রোগীদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে পেয়িং বেডে রোগী ভর্তি চলছিল।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর আগে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায়।
রোববারের আদেশে বলা হয়েছিল, আদালত কর্তৃক হাসপাতালের টেন্ডার কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করায় টেন্ডার কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে রোগীদের পণ্য সরবরাহের জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত হয়নি। ভর্তি রোগীদের পণ্য/খাবার সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বধন কর্তৃপক্ষকে পত্র মারফত এবং সরাসরি অবহিত করা হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভর্তি রোগীদের পণ্য/খাবার সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ বা নির্দেশনা প্রদান না করায় রোগীদের পণ্য/খাবার সরবরাহ চলমান রাখা সম্ভব হচ্ছে না। পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাসপাতালের বর্হিবিভাগে রোগী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হলো। ভর্তি রোগীদের পর্যায়ক্রমে বাড়িতে পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কনসালটেন্ট ও ওয়ার্ড ডাক্তারদের নির্দেশ প্রদান করা হলো।
বহির্বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. এ কে এম শফিউল আযম বলেন, আমাদের পরিচালক স্যারের নির্দেশে আমরা ভর্তির কার্যক্রম বন্ধ রেখেছিলাম। আজ আবার স্যারের আরেক আদেশ পেয়ে ভর্তি কার্যক্রম আগের মতো স্বাভাবিকভাবে করছি।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান সূত্রে জানা গেছে, ৫০০ শয্যার এই হাসপাতালে এখন আনুমানিক ৪৮০ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ১৫০ জনের মতো পেয়িং বেডে ভর্তি। বাকি রোগীগুলো ফ্রি বেডের।
হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. রতন কুমার রায় বলেন, আমরা অনেকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, কিন্তু লাভ হয়নি। বাধ্য হয়ে আমরা রোগী ভর্তি বন্ধ রেখেছিলাম। আমরা চাই দ্রুত বিষয়টি সমাধান হোক। গতকাল রোগী ভর্তি বন্ধ করার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, ফলে আজ থেকে আবারও রোগী ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছি।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৪ জুন ‘রোজ এন্টারপ্রাইজ’ নামে পাবনা মানসিক হাসপাতালে রোগীদের খাবার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডারে দ্রব্যের নাম উল্লেখ করা জটিলতা নিয়ে পাবনা জজকোর্টে একটি মামলা দায়ের করে। ওই বছরের ২৯ জুন আদালত সার্বিক বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিবাদীর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা জারি করলে শুরু হয় জটিলতা।