মুক্তিযোদ্ধা সংসদে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও চাঁদাবাজিতে বাধা দেয়ায় পাবনায় মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে আরেক মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম বাবলুর বিরুদ্ধে। প্রতিকার চেয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে পাবনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ‘এডভোকেট সাইফুল আলম বাবলু চক্র কর্তৃক সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বন্ধ, লাঞ্ছনা ও বিভিন্ন হয়রানি প্রতিরোধে গঠিত আহবায়ক কমিটি’ এই কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের অন্যতম প্রধান শর্ত লাল মুক্তিবার্তা ও বাংলাদেশ গেজেটে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাচাই বাছাইয়ের বিভিন্ন ধাপ পার হয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি পেয়ে আসছেন। গত ২৩ আগস্ট জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে তাদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়েছে। তারপর থেকে বিভিন্ন সময়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধার নামে অসত্য অভিযোগ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে দাখিল করে ভাতা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে গত ২৬ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাক্ষরিত পত্রে মুক্তিযোদ্ধাদের আবারও যাচাই বাছাইয়ের জন্য ডাকা হয়েছে। যা আমাদের জন্য অপমানজনক।
মুক্তিযোদ্ধারা আরও অভিযোগ করেন, সাইফুল ইসলামা বাবলু দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নিয়ন্ত্রণ নিতে নানা অপকর্ম করে আসছেন। তার মতের বিরুদ্ধচারণ করলেই তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেগে পড়েন এবং অসত্য অভিযোগ করে নানা ভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানি করেন। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের বিড়ম্বনায় ফেলে তা সমাধান করে দেয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা উৎকোচ নেন। তার এই অপকর্ম পাবনায় প্রকাশ্য ঘটনা। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধারাও সাইফুল ইসলাম বাবলুর ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন তারা। একই সাথে সাইফুল ইসলাম বাবলুর শাস্তিও দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম বাবলু বলেন, যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছে তারা মূলত ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযোদ্ধা না হলেও তারা পরিচয় দিয়ে সরকারের ভাতা ্উপভোগ করেছে।এখন সরকার কর্তৃক তাদের ভাতা বন্ধ করেছে সেজন্য তারা আমার বিরুদ্ধে কর্মসূচি পালন করতেছে।
ডা. মেজর (অবঃ) মনসুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা ডা. মেজর (অব:) মীর্জা মনছুর, খন্দকার নাসির উদ্দিন নাসিম, গোলাম মোস্তফা, তোফাজ্জল হোসেন, আজমত আলী, আখতারুজ্জামান, আক্তার আলী, মোস্তফা কফিল উদ্দিন, আবদুল জব্বার, সাইদুল ইসলাম, আব্দুর রশিদ, নজরুল মালিথা, আব্দুস সামাদ, আমিরুজ্জামান খান, আব্দুর রশীদ, ডা. রথিন দত্ত কুন্ডসহ ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধা।
এর আগে এডভোকেট সাইফুল আলম বাবলু চক্র কর্তৃক সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বন্ধ, লাঞ্ছনা ও বিভিন্ন হয়রানি প্রতিরোধে কমিটি গঠন করা হয়। এতে ডা. মেজর (অব:) মীর্জা মনছুরকে আহবায়ক ও খন্দকার নাসির উদ্দিন নাসিমকে যুগ্ম-আহবায়ক করা হয়। কমিটির অন্যান্যরা হলেন- দফতর সম্পাদক মো. সোহরাব উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক আবদুল জব্বার, কোষাধ্যক্ষ মো. তোফাজ্জল হোসেন হেলাল এবং সদস্য পদে আব্দুল লতিফ সেলিম, শামসুল আলম (পানচের) ও মো. আব্দুর রশিদ।
এর আগে একই দাবিতে গত মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) পাবনা জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধারা।