পাবনায় চাহিদার বেশি উৎপাদন, পেঁয়াজের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা পাবনায় চাহিদার বেশি উৎপাদন, পেঁয়াজের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা – দৈনিক পাবনা
  1. admin@dainikpabna.com : admin :
  2. rakibhasnatpabna@gmail.com : Rakib Hasnat : Rakib Hasnat
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শনিবার, ১০ জুন ২০২৩, ১১:২৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
মেয়ে নিয়ে প্রবেশ করতে না দেয়ায় পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ দোগাছিতে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ অবস্থায় হাতেনাতে ধরা ব্যবসায়ী ফরিদপুরের কেএম মেমোরিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে ফল উৎসব রাষ্ট্রপতির আদেশে পাবিপ্রবির ৬ কর্মকর্তার তুরস্ক সফর বাতিল ঘোষণা ছাত্রলীগ নেতা জনির অত্যাচারে অতিষ্ট পাবনার ভাঁড়ারাবাসী আগুনে ৩ ঘর ভস্মীভূত ও পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি পাবনায় ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ, হুমকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন: কৃষিমন্ত্রী তারাশে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রাচীর ভাংচুর ও জমি দখলের অভিযোগ  মালিগাছায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ

পাবনায় চাহিদার বেশি উৎপাদন, পেঁয়াজের দাম পাচ্ছেন না চাষিরা

বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১ বছর আগে
  • ১১৬ বার পঠিত

পেঁয়াজের রাজধানীখ্যাত পাবনার সুজানগর, সাঁথিয়া ও বেড়ায় এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ কারণে জেলার বাজারগুলো এখন পেঁয়াজে সয়লাব। কিন্তু পেঁয়াজচাষিদের মুখে নেই তৃপ্তির হাসি। ফলনে সন্তুষ্ট হলেও দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা। লাভ তো দূরের কথা, জমি ইজারার টাকা, বীজ, সার-কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরিসহ উৎপাদন খরচই উঠছে না কৃষকের।

পাবনার হাজিরহাট, পুষ্পপাড়াহাট, বনগ্রাম হাট, আতাইকুলা বাজার, সুজানগরহাট, সাঁথিয়া বাজার, ধুলাউড়ি হাট, বেড়ার চতুরহাট, দুবলিয়ার হাটসহ বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, ভ্যান, করিমন, অটোরিকশা, ট্রলি, মিনি ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনে করে বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে আসছেন চাষিরা। কিন্তু ক্রেতা তেমন না থাকায় হতাশ হয়ে বসে থাকতে দেখা যায় তাদের। পাইকারি ব্যাপারীরা দাম বলামাত্রই পেঁয়াজ বিক্রি করে বাড়ি ফিরছেন তারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় হালি পেঁয়াজের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে, কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৪৪ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে তাহেরপুরী, ফরিদপুরী, বারি পেঁয়াজ-১, কলসনগর, লালতীর কিং, হাইব্রিড লালতীর, হাইব্রিড ইস্পাহানি ও হাই মেটাল জাতের পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে, আর গত বছর আবাদ হয়েছিল ৪৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সুজানগর উপজেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৫০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর। এ ছাড়া সাঁথিয়ায় ১৫ হাজার ৭০০ এবং বেড়া উপজেলায় ৩ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে।

সুজানগরের খয়রান, দুর্গাপুর ও সাঁথিয়ার বনগ্রামে দেখা যায়, কৃষকরা তীব্র গরম উপেক্ষা করেই পেঁয়াজ তুলছেন। চাষিদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও পেঁয়াজ মৌসুমে বসে নেই। নারী-শিশুরা ভোর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন শ্রমিকদের খাবার রান্না ও পেঁয়াজের মাথা কাটার কাজে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে পেঁয়াজের মাথা কাটা।

সুজানগরের দুর্গাপুরের চাঁদ আলী মণ্ডল বলেন, এবার আমি ২৫ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছিলাম। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু বাজারে যে দাম দেখছি, তাতে উৎপাদন খরচই তুলতে পারব না। এমন দাম থাকলে ভবিষ্যতে পেঁয়াজ চাষ করব কি না ভাবছি।

বনগ্রাম হাটে কথা হয় কৃষিতে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সুজানগরের ভায়না গ্রামের মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রামাণিকের সঙ্গে। এবার তিনি আবাদ করেছেন ২০ বিঘা। দামে আশাহত হয়ে তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে কীটনাশক খরচ ৩ হাজার টাকা, সার ও চাষ বাবদ ৫ হাজার টাকা। শ্রমিক খরচ ১৫ হাজার টাকা। আর জমি ইজারা নিতে হয় ২০ হাজার টাকা দিয়ে। সব মিলিয়ে বিঘাপ্রতি ৪০ হাজার টাকার ওপরে খরচ হয়েছে। এবার বিঘা প্রতি উৎপাদন হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ মন, আর বাজারে ৬০০ থেকে ৮৫০ করে বিক্রি হচ্ছে। তাতে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি বিঘায়।

বেড়ার চতুরহাটে পাইকারি ক্রেতা করিম উদ্দিন বলেন, এখন বাজারে প্রচুর পেঁয়াজ, কিন্তু চাহিদা কম। তাই দাম কম থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে কৃষকরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, আমরা পাইকারি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির মুখে আছি। যেহেতু এটাই আমাদের পেশা, তাই লাভ হোক আর লোকসান হোক, ব্যবসা তো করতেই হবে।

কয়েকজন কৃষক বলেন, ভরা মৌসুমেও আমদানি করা পেঁয়াজে বাজার সয়লাব। কম দামের বিদেশি পেঁয়াজ বাজারে থাকায় আমাদের দেশি পেঁয়াজের চাহিদা কম। এবার আমদানি কিছুটা কমিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে যদি সংরক্ষণ করে, তাহলে দেশের মানুষ ও কৃষকরাও ব্যাপক লাভমান হতো, কিন্তু আমরা বারবার এসব দাবি করেও কোনো লাভ হয়নি। পেঁয়াজের সংরক্ষণাগার তৈরি করতে আজও কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আমাদের ৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ হেক্টর জমিতে এবার চাষ হয়েছে। আর উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। বাজারে চাহিদা কম থাকায় দাম একটু নিম্নমুখী। তবে পেঁয়াজগুলো যদি সংরক্ষণ করে কিছুদিন পরে বিক্রি করে, তাহলে কৃষকরা আরও ভালো দাম পেতেন।

তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যাতে পেঁয়াজের সঠিক দাম পান, এ জন্য সরকারি পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই পাবনায় একটি বড় আকারের পেঁয়াজ সংরক্ষণাগার তৈরি করা সম্ভব হবে।

 

দৈনিকপাবনা/আরএইচ

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ দৈনিক পাবনা
Themes Customized By Shakil IT Park