পাবনায় ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ, হুমকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন পাবনায় ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ, হুমকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন – দৈনিক পাবনা
  1. admin@dainikpabna.com : admin :
  2. rakibhasnatpabna@gmail.com : Rakib Hasnat : Rakib Hasnat
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
সোমবার, ২৯ মে ২০২৩, ০৮:১২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
পাবনায় ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ, হুমকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে লাভ নেই, সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন: কৃষিমন্ত্রী তারাশে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রাচীর ভাংচুর ও জমি দখলের অভিযোগ  মালিগাছায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ ঈশ্বরদীতে বাড়ির পাশের পুকুরে ডুবে ৩ শিশুর মৃত্যু পাবনা আইডিয়াল নার্সিং কলেজে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস উদযাপন পাবনায় মাদরাসা শিক্ষককে হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ৪ দিনের সফরে পাবনা যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বরখাস্তের পরও আট বছর ধরে বেতন তুলছেন প্রধান শিক্ষক রূপপুরে উদ্ধার রাশিয়ান নারীর মরদেহে আঘাতের চিহ্ন

পাবনায় ভাঙন আতঙ্কে নদী পাড়ের মানুষ, হুমকিতে পল্লী বিদ্যুৎ সাবস্টেশন

দৈনিক পাবনা ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ৪ দিন আগে
  • ১ বার পঠিত

পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুরের পুরানভারেঙ্গা এলাকায় যমুনা নদীতে তিব্ ভাঙন দেখা  দিয়েছে। এতে ঝুঁকির মুখে রয়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা। সেই সাঙ্গে হুমকির মুখে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন। যেকোনো সময় বিলিন হয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে। পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশনটি নদীগর্ভে বিলীন হলে অন্ধকারে পরিণত হবে এই অঞ্চল। পানি উন্নয়নবোর্ডের কর্মকর্তারা খোঁজখবর নিতে আসেনি। জিও ব্যাগ প্রকল্পের কথা থাকলেও এসব প্রকল্প অদৃশ্যই রয়ে গেছে।

কাশিনাথপুর পল্লী বিদুৎ অফিস সূত্র জানা গেছে, উপজলার নগরবাড়ি নৌবন্দর এলাকা থেকে তিন কিলোমিটার যমুনা নদীর মাটির নিচ দিয়ে ৪০ কাটি টাকা ব্যায় ৩৩০০০ কেভি জাতীয় বিদ্যুৎ সঞ্চালন  লাইনের মধ্য দিয়ে চরাচঞ্চলের মানুষের বিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়। ২০২১ সাল  বেড়া ও মানিকগঞ্জ জেলার প্রায় সাড়ে বারো হাজার পরিবার বিদুৎ সংযাগ পায়। চরাঞ্চলর লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবীর পর বিদুৎ পেয়ে উৎসব আমেজ ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয় সেই সময় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। এখন আবার নদী ভাঙনের কবলে হারাতে বসছে তাদর কাঙ্খিত বিদ্যুৎ। নদী ভাঙ্গনের ফলে সাব মেরিন কেবলের তার মাটির নিচ থেকে বের হয়ে গেছে। এত যেকোন সময় বড় ধরেণের দূর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পল্লি বিদুৎ অফিস থেকে একাধিকবার বেড়া পানি উনয়ন বোর্ডকে (পাউবা) অবগত করেও এখন পর্যন্ত ভাঙন রক্ষায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে তাদের অভিযাগ তাদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজলার চর কল্যাণপুর থেকে  মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর  উপজেলা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলামিটার এলাকায় একমাস আগ থেকে ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি হওয়ায় শুরু হয়েছে তিব্র এ ভাঙন। নদীপাড়ের বাসিন্দারা তাদের উঠতি ফসল কেটে কেটে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চিনাবাদাম যেটি এখনো ঠিকমত গাছই হয়নি সেগুলো কেটে নেওয়া হচ্ছে।

 গত তিন বছর নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে কয়েক হাজার বিঘা ফসলী জমি ও ঘরবাড়ি। গত এক মাস প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি ও কয়েকশ বিঘা ফসলি জমি যমুনা নদীত বিলিন হয়েছে। ভাঙন ঝুকিপূর্ন হয়েছে পল্লী বিদ্যুতর সাব স্টশন। যেটি ভাঙন থেকে মাত্র একশ গজ দুরে।  সাব স্টেশন  ঝুঁকিপুর্ণ ঘাষণাা করে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষক আবদুস সালাম জানায়, নদীর এই চর ভাঙনে তিনি তার বসতভিটাসহ প্রায় দশ বিঘা জমি হারিয়েছেন। হারিয়েছেন শেষ সম্বল টুকু। সব হারিয়ে তিনি নিঃস্ব। তিনি বলেন আমার এই দুর্দিনে কেউ পাশে এসে দাঁড়ায়নি। কারো কোন সহযোগিতা পাইনি। চারবার এই নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে হারিয়েছেন সবকিছু। আর হারাতে চাইনা। আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা কিছু একটা করেন।

একই এলাকার কৃষক আব্দুল আউয়াল বলেন, সব মিলিয়ে প্রায় ১০ বার এই নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। আমাকে সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে এই নদী। কোথায় গিয়ে ঘর তুলব দুশ্চিন্তায় দিন কাটে। সবশেষে এইবার এখানে বাড়ি করেছি এটাও হয়তো আর ১০-১৫ দিন নদী ভাঙন হলে নদীতে ডুবে যাবে। সরকারের কাছে আকুল আবেদন নদীতে যেন জিও ব্যাগ ফেলে আমাদের রক্ষা করে।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল হোসেন জানায়, গত বছর আমাদের এই এলাকায় প্রায় ২৫০ টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তবে গতবারের তুলনায় এবছর নদী ভাঙ্গনের পরিমাণ একটু বেশি। এতে হুমকির মুখে রয়েছেন স্থানীয়রা। সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছেন আমাদের এলাকায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পল্লী বিদ্যুতের সাব স্টেশন। আর ১০-১৫ দিন এভাবে নদী ভাঙ্গন হলে সেটিও তলিয়ে যাবে নদীর মধ্যে। সেটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে দেশের কোটি টাকা নষ্ট হবে।

পলাশ হোসাইন নামের একজন জানায়, আমাদের এই এলাকায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার লোকজনের বসবাস। পল্লী বিদ্যুৎ এর সাব স্টেশন টি পানিতে তলিয়ে গেলে এই ৭০ থেকে ৮০ হাজার লোকজন আবার অন্ধকারে নেমে চলে আসবে। তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বপ্নের মত মনে হয় আমাদের ভাবলে অবাক লাগে যে আমাদের এই দ্বীপে বিদ্যুৎ আছে সরকারকে এজন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। তবে সরকারের কাছে আকুল আবেদন এই নদীতে জিও ব্যাক ফেলে নদী ভাঙ্গন রক্ষা করুন।

আব্দুল আহাদ মিয়া নামের আরেকজন বলেন, আমাদের চরে হাজার হাজার বিঘা জমিতে উঠতি ফসল রয়েছে। যেটি এখনে কাটার উপযোগী হয়নি। কিন্তু নদী ভাঙনের জন্য দ্রুত সেগুলো কেটে ফেলানো হচ্ছে। আমরা মাত্র দেড় মাস হয়েছে চিনাবাদাম লাগিয়েছি। অনেক আশা ছিলো বাদাম বিক্রি করে একটি ঘর উঠাবো। সেটিও শেষ।

এ ব্যাপারে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ ২ এর জেনারেল ম্যানেজার মজিবুল হক জানান, ৪০ কোটি টাকা পেয়ে নির্মাণ করা হয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ এর সাবস্টেশন। সেটা বর্তমানে হুমকির মধ্যে রয়েছে।

আমাদের পল্লী বিদ্যুৎ অফিস থেকে পানি উনয়ন বোর্ডকে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণর জন্য পাঁচবার চিঠি দওয়া হয়ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মাসিক সভাতেও আলাচনা করা হয়েছে।

এছাড়াও পাবনা-১ ও পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্যরা ভাঙ্গনরাধে ব্যবস্থা গ্রহণর জন্য পানি উনয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন । কি কারনে পানি উনয়ন বার্ড কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না এটা আমাদের বাধগম্য নয়। দ্রুত সময়র মধ্য কল্যাণপুর খেয়াঘাট এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে না পারলে ওখানকার পল্লী বিদ্যুতর সাব স্টেশন নদীগর্ভ বিলীন হয়ে যাবে এবং বড় ধরনর দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তাহলে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে পল্লী বিদ্যুতের এই সাবস্টেশন। সেই সাথে ১৩ হাজার গ্রাহক হারাবে বিদ্যুৎ।

এ ব্যাপারে বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের
নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরাও আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। অতি দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাবনা- ২ আসনের সংসদ সদস্য ফিরোজ কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদী ভাঙন দেখা দেওয়াতে স্থানীয় বাসিন্দা ঝুঁকিতে রয়েছে। তেমনি সেখানকার পল্লী বিদ্যুতের সাব-স্টেশনটিও হুমকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে চাহিদা পত্র দেওয়া আছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ দৈনিক পাবনা
Themes Customized By Shakil IT Park