চরতারাপুরে সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা দিল কারবারীরা! চরতারাপুরে সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা দিল কারবারীরা! – দৈনিক পাবনা
  1. admin@dainikpabna.com : admin :
  2. rakibhasnatpabna@gmail.com : Rakib Hasnat : Rakib Hasnat
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
শুক্রবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
পাবনায় প্রভাবশালীদের অবৈধ বালু উত্তোলনে ভাঙন! শত শত বিঘা ফসলি জমি বিলীন সাদুল্লাপুরে ৩০ কেজির বস্তায় ২৫ কেজি চাল দেওয়ার অভিযোগ ডিলারের বিরুদ্ধে  পাবনায় ২২ মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৩৫১ নেতাকর্মী গ্রেফতার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ অবরোধ ও সহিংসতার প্রতিবাদে পাবনায় বিক্ষোভ মিছিল চরতারাপুরে সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা দিল কারবারীরা! চরতারাপুরে ইলিশ ধরা থেকে বিরত রাখতে জেলেদের মাঝে চাল বিতরণ পাবনায় শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আ.লীগ নেতার ব্যতিক্রমী উদ্যোগ পাবনায় বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাটে নিঃস্ব রিকশাচালকের পরিবার চরতারাপুরে জমির পাট কেটে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষ , বিচারের জন্য ঘুরছে দ্বারে দ্বারে

চরতারাপুরে সুদের টাকা আদায়ে বৃদ্ধার ঘরে তালা দিল কারবারীরা!

দৈনিক পাবনা ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১ মাস আগে
  • ১৬ বার পঠিত

তাঁত ব্যবসায় সুদে কারবারীদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা সুদে ধার নেন ইদ্রিস মল্লিক (৫৫)। সুদের  টাকা দিতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। আর সেই টাকা আদায়ে ইদ্রিসের ঘরে থাকা তার বৃদ্ধা মা রমেছা বেগম (৯০) কে জোরপূর্বক বের করে দিয়ে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেয় সুদে কারবারীরা।
এমনই এক অমানবিক ঘটনা ঘটেছে পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়নের তারাবাড়িয়া কারিগরপাড়া গ্রামে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকেল চারটার দিকে খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তালা ভেঙে ওই বৃদ্ধাকে তার ঘরে তুলে দেন।

মঙ্গলবার বিকেলে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের বাসিন্দা মৃত রায়হান মল্লিকের স্ত্রী বৃদ্ধা রমেছা বেগম তার ছেলে ইদ্রিসের ঘরের দরজার সামনে বসে আছেন। টিনের ঘরটিতে তিনটি কক্ষ। দুটি কক্ষ তার ছেলের। আর একটি কক্ষে থাকেন বৃদ্ধা রমেছা। তিনটি কক্ষে তালা ঝুলানো। ছেলে ইদ্রিস বা তার স্ত্রী-সন্তান কেউ বাড়িতে নেই।

জানতে চাইলে বৃদ্ধা রমেছা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘তার ছেলে ইদ্রিস তিনজনের কাছ থেকে সুদে টেকা নিছিলো। সেই টেকা দেয় না। ছাওয়াল কোনে পলাইছে জানি না। খলিল, রইচ আর দুলাল গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বাড়ির পর আইসে টেকা চায়। আমি কইছি ছাওয়ালেক টেকা দিছেও তার কাছে যাও। টেকা যহন দিছেও তহন তো আমার কাছে শোনো নাই। এহন আমার কাছে টেকা চাইচ্ছেও ক্যা। পরে ওরা কয় ঘরের থেনে বাড়াও, ঘরে তালা দেবো। এই কয়া আমাক জোর করে ঘরের থেনে বাইর কইরে দিয়ে তালা দেয়। পরে আমি চিয়েরমেনেক কইছি।’

এদিকে, বিকেল চারটার দিকে চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান তার পরিষদের অন্য দুই ইউপি সদস্য সহ বৃদ্ধার বাড়িতে যান। এ সময় স্বজন প্রতিবেশিসহ অন্যান্য মানুষের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে বৃদ্ধা রমেছা বেগমকে ঘরে তুলে দেন। তাকে বাড়িতে বসবাসে আশ্বস্ত করেন। এ সময় তিনি বৃদ্ধাকে কিছু নগদ আর্থিক সহায়তাও দেন চেয়ারম্যান।

সেখানে উপস্থিত রমেছা খাতুনের ছোট ছেলে গোলাম মোস্তফা জানান, ‘তারা চার ভাই, দুই বোন। ইদ্রিস আলী মেঝো ভাই। তাঁত ব্যবসার করেন। চারটি তাঁতের কারখানা আছে তার। বছর খানেক আগে ব্যবসার কারণে একই গ্রামের মাদ্রাসাপাড়ার বাসিন্দা খলিল হোসেন, রইচ উদ্দিন ও দুলাল হোসেনের কাছ থেকে বেশ অনেক টাকা সুদে ধার নেন। এখন সুদের টাকা দিতে পারেন না। সুদে কারবারীরা তাদের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। সেই ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কোথায় গেছে জানি না। সোমবার সকালে ওই তিনজন এসে ঘরে তালা মেরে দিয়ে গেছে। আমরা বাধা দেই নাই যদি মারধর করে।’

স্থানীয় দুই নাম্বার ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আব্দুল আলীম বলেন, ‘সুদের টাকার জন্য ছেলেকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে তালা দেয়ার ঘটনাটি একটি জঘন্যতম অমানবিক ঘটনা। সুদের কারবারীদের কারণে অনেক সংসারে অশান্তি বিরাজ করছে। তাদের আমরা বিভিন্ন সময়ে সুদের ব্যবসা করতে নিষেধ করি। কিন্তু তারা গোপনে এ কাজগুলো করে। যারা সুদে টাকা নেয় তাদের সচেতন হওয়া দরকার।’

চরতারাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, ‘আজ বিকেলে পরিষদ থেকে বাড়ি যাবার সময় ওই বৃদ্ধা আমাকে ঘটনাটি জানায়। তখনই আমি ওই বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পাই। সুদের টাকার জন্য এমন কাজ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ঘরে তুলে দিয়েছি। কোনো সমস্যা হলে জানাতে বলেছি। সুদের ব্যবসা গ্রামগঞ্জে এমনভাবে ঢুকেছে তাদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবি। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তাদের সহযোগিতা চাই, যাতে সুদের ব্যবসা বন্ধ করতে পারি।’

এ বিষয়ে কথা হয় সুদে কারবারী তিনজন তারাবাড়িয়া মাদ্রাসাপাড়ার বাসিন্দা খলিল হোসেন, রইচ উদ্দিন ও দুলাল হোসেনের সাথে। তারা সুদে টাকা ধার দেবার কথা অস্বীকার করে বলেন, তাদের তিনজনের কাছ থেকে জমি বন্ধক রাখা বাবদ মোট ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন ইদ্রিস মল্লিক। তিনি টাকাও ফেরত দেন না, জমিও দেন না। এখন আমাদের তো টাকা লাগবে। কে দিবে টাকা। সে তো বাড়ি থেকে পলাতক। তাই বাধ্য হয়ে ইদ্রিসের বাড়িতে গিয়ে তার ঘরে তালা দিয়েছি।’

তাই বলে বৃদ্ধা মাকে ঘর থেকে বের করে তার কক্ষে তালা দেয়া কি ঠিক কাজ হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ‘কাজটা ঠিক হয় নাই। আমরা জানি ঘরটা ইদ্রিসের। যাহোক চেয়ারম্যান তালা ভেঙে দিছেন, ভাল করেছেন।’

এ বিষয়ে তাঁত ব্যবসায়ী ইদ্রিস আলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। পলাতক থাকায় ও তার মুঠোফোন নাম্বার বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২২ দৈনিক পাবনা
Themes Customized By Shakil IT Park